মাদ্রাসার এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য সুখবর! জানুয়ারি ২০২৫ মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য সরকার চেক ছাড় করেছে। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, অনুদান বণ্টনকারী ব্যাংকগুলোতে ইতোমধ্যে চেক পাঠানো হয়েছে, ফলে আগামী ২ ফেব্রুয়ারির পর শিক্ষক ও কর্মচারীরা তাঁদের সরকারি অংশের বেতন উত্তোলন করতে পারবেন।
এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। এতে স্বাক্ষর করেছেন উপপরিচালক মো. আবুল বাসার। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে,
“শিক্ষক-কর্মচারীগণ আগামী ০২/০২/২০২৫ খ্রি. তারিখের পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হতে জানুয়ারি/২০২৫ মাসের বেতন-ভাতাদি‘র সরকারি অংশ উত্তোলন করতে পারবেন।”
এমপিওর স্মারক নম্বর: ৫৭.২৫.০০০০.০১১.০৬.০০১.২৪-৫১
তারিখ: ২৯-০১-২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
জানুয়ারি মাসের মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন ২০২৫
এমপিও বা “Monthly Pay Order” হলো এক ধরনের সরকারি আর্থিক সহায়তা, যা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য সরকার দিয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকার শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন দেওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করে, যা তাঁদের জীবিকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মাদ্রাসার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি মাসে সরকারি অনুদান পান, তবে এই চেক ছাড়ের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ নেই। ফলে শিক্ষকরা সবসময় অপেক্ষায় থাকেন কবে চেক ছাড় হবে এবং কবে তাঁরা বেতন তুলতে পারবেন।
সরকার মাদ্রাসার শিক্ষকদের একটি অংশের বেতন-ভাতা দেয়, যা মূলত বেসিক বেতন এবং কিছু নির্দিষ্ট ভাতার উপর নির্ভর করে। বেসরকারি মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের পুরো বেতন সাধারণত প্রতিষ্ঠান ও সরকার মিলে বহন করে। নিচে একটি টেবিল আকারে বিষয়টি তুলে ধরা হলো:
মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন কাঠামো ২০২৫
বেতন উপাদান | সরকারি অংশ (%) | প্রতিষ্ঠানের অংশ (%) |
---|---|---|
মূল বেতন | ১০০% | ০% |
বাড়িভাড়া ভাতা | ৫০% | ৫০% |
চিকিৎসা ভাতা | ১০০% | ০% |
বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট | ১০০% | ০% |
উপরের তালিকা থেকে বোঝা যায়, শিক্ষকদের মূল বেতন এবং বার্ষিক বৃদ্ধির পুরো টাকাই সরকার বহন করে। তবে বাড়িভাড়া ভাতা প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীল, এবং এটি এলাকার জীবনযাত্রার ব্যয় অনুযায়ী কম-বেশি হতে পারে।
এমপিও চেক ছাড়ের পর শিক্ষকদের মনে সবসময় একটি প্রশ্ন থাকে—“আমরা কবে বেতন তুলতে পারবো?” এবারের ক্ষেত্রে জানুয়ারি মাসের বেতন ২ ফেব্রুয়ারির পর উত্তোলন করা যাবে।
জানুয়ারি ২০২৫ মাসের এমপিও বেতন উত্তোলনের সময়সূচি
পর্যায় | তারিখ |
---|---|
চেক ছাড় | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ |
ব্যাংকে চেক প্রেরণ | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ |
শিক্ষক বেতন উত্তোলন | ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ |
উপরের সময়সূচি অনুযায়ী, ২৯ জানুয়ারি চেক ছাড় হয়েছে এবং ২ ফেব্রুয়ারির পর শিক্ষকেরা বেতন তুলতে পারবেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছি:
- বেতন উত্তোলনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি:
- জাতীয় পরিচয়পত্র
- এমপিও নম্বর
- ব্যাংক একাউন্ট নম্বর
- স্বাক্ষরিত বেতন রসিদ
- বেতন সংক্রান্ত সমস্যা হলে করণীয়:
যদি কেউ বেতন পেতে দেরি হওয়া বা বেতন সংক্রান্ত কোনো জটিলতা অনুভব করেন, তাহলে তাঁরা সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা অফিস বা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করতে পারেন। - বেতন প্রসঙ্গে নিয়মিত আপডেট:
- শিক্ষকরা সরকারি ওয়েবসাইট বা বিষয়ভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ থেকে নিয়মিত আপডেট পেতে পারেন।
- কোনো কারণে বেতন পাওয়ার তারিখ পরিবর্তন হলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া
মাদ্রাসা শিক্ষকদের জন্য এমপিও চেক ছাড় হওয়া মানে স্বস্তির বিষয়। অনেক শিক্ষক সময়মতো বেতন না পেলে আর্থিক সমস্যার মুখে পড়েন। কয়েকজন শিক্ষকের মতামত নিচে তুলে ধরেছি।
মো. হারুনুর রশিদ, সহকারী শিক্ষক, চট্টগ্রাম:
“প্রতিবার বেতনের অপেক্ষায় থাকতে হয়। তবে এবার দ্রুত চেক ছাড় হওয়ায় আমরা স্বস্তিতে আছি।”
শারমিন আক্তার, প্রধান শিক্ষিকা, ঢাকা:
“সরকার যদি নির্দিষ্ট তারিখে এমপিও চেক ছাড় করার নিয়ম চালু করতো, তাহলে শিক্ষকরা আরও বেশি সুবিধা পেতেন।”
জানুয়ারি ২০২৫ মাসের এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন পরিশোধের জন্য চেক ছাড় হয়েছে, এবং শিক্ষকরা ২ ফেব্রুয়ারির পর তাঁদের বেতন তুলতে পারবেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আর্থিক নিশ্চয়তা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা শিক্ষকদের জীবনযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তবে, নির্দিষ্ট সময়ে চেক ছাড় এবং নিয়মিত বেতন প্রদান শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি। সরকার যদি এ বিষয়ে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়, তবে শিক্ষকরা আরও স্বস্তিতে থাকবেন। প্রিয় বন্ধুরা, আপনি MPO Notice বিষয়ক আরও তথ্য জানতে আমাদের এই ক্যাটাগরি ঘুরে দেখুন।