Friday, October 18, 2024
বাড়িশিক্ষা বইঅন্যান্য বইস্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বই PDF - সংগ্রহ করুন।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বই PDF – সংগ্রহ করুন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বন্ধুরা, এই আর্টিকেলে আমি স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বই PDF নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস এটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যয়ন বিষয় হয়ে উঠেছে। ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক ও স্নাতক সম্মান পর্যায়ের ছাত্রদের জন্য এটি অবশ্য পাঠ্য করা হয়েছে। এর পূর্ণমান ১০০ এবং ক্রেডিট সংখ্যা ৪। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জাতীয় ইতিহাস জানার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে, যেন শিক্ষার্থীরা দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত হতে পারে।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বই PDF

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস না পড়ে একজন শিক্ষার্থী দেশ সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান না নিয়েই ডিগ্রি অর্জন করতে পারে, এটি খুবই দুঃখজনক। এমন শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধ, শহীদদের আত্মত্যাগ এবং স্বাধীনতার জন্য কতোটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে তা জানবেন না।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ মানুষের আত্মত্যাগ এবং ছয় লক্ষ নারীর আত্মদানের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। কিন্তু এখন এই জাতীয় ইতিহাস না জানার ফলে নতুন প্রজন্মকে শেকড়হীন করে তুলছে। স্বাধীনতা সম্পর্কে অপর্যাপ্ত জ্ঞান থাকার ফলে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।

শিক্ষায় এই বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি

জাতীয় ইতিহাসকে অবশ্য পাঠ্য করার জন্য শিক্ষকদের দাবি দীর্ঘদিনের। ২০১৩ সালে শিক্ষাবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর দাবির ভিত্তিতে একটি শুনানী করে। এই শুনানীতে কমিটির সবাই একমত হন যে, জাতীয় ইতিহাস জানার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিষয়টি নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও একাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি উত্থাপন করেন। সকল সদস্য বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে সমর্থন জানান।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস অবশ্য পাঠ্য হিসেবে ঘোষণার পরই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর জন্য একটি বিশেষ পাঠ্যক্রম তৈরি করে। পাঠ্যক্রম প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির মধ্যে ছিলেন ঢাকার বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম, বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ মকফুর রহমান এবং ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যাপক ডালিয়া আহমেদ

সিলেবাস তৈরির সময় বড় একটি প্রশ্ন ছিল— স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের শুরুটা কোথা থেকে হবে? অনেক আলোচনা ও বিতর্কের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করা হবে। এরপরে সিলেবাসটিকে তিনটি পর্বে ভাগ করা হয়:

  1. প্রথম পর্ব: সর্বভারতীয় এবং অভিন্ন বাংলার পটভূমি।
  2. দ্বিতীয় পর্ব: ১৯৪৭ থেকে মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি।
  3. তৃতীয় পর্ব: মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর শাসনকাল (১৯৭৫ পর্যন্ত)।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ১৯৭৫ সালের গুরুত্ব

Independent Bangladesh 1
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ১৯৭৫ সালের গুরুত্ব

এই পাঠ্যক্রমে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ, এই সময়কালেই দেশের মূল অর্জনগুলো নস্যাৎ করার চেষ্টা শুরু হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলোকে ধ্বংস করার কাজ শুরু হয়। দেশে ফিরিয়ে আনা হয় দ্বিজাতিতত্ত্ব। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে আদর্শিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে ছিল বাংলাদেশ, তা একেবারে নস্যাৎ করার চেষ্টা করা হয়।

এ কারণে ১৯৭৫ সালকে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পরে স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের জানানো প্রয়োজন।

নতুন পাঠ্যক্রম তৈরি হলেও কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। কলেজগুলোর অবকাঠামো, লাইব্রেরি সুবিধা এবং শিক্ষক স্বল্পতা এই পাঠ্যক্রম বাস্তবায়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এর ফলে মূল পাঠ্যক্রম থেকে কয়েকটি অধ্যায় বাদ দিয়ে বর্তমান পাঠ্যক্রম চূড়ান্ত করা হয়েছে।

তবে কমিটি মনে করে, প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত ১৪টি অধ্যায়ের পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যক্রম শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোত্তম ছিল। বর্তমানে ব্যবহৃত পাঠ্যক্রমটি কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে, তবে এর মূল উদ্দেশ্য একই রয়ে গেছে— শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া।

পাঠ্যবই রচনার উদ্যোগ

পাঠ্যক্রম চূড়ান্ত হওয়ার পরে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি রেফারেন্স বই লেখার উদ্যোগ নেওয়া হয়। যদিও অধ্যাপক কামাল ও অধ্যাপক সেলিম অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকায় কাজটি সম্পূর্ণ করতে পারেননি, তবুও বর্তমান পাঠ্যক্রম অনুযায়ী বইটি লেখা হয়।

এই বইটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জানতে পারবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের কারণ এবং বঙ্গবন্ধুর অবদান সম্পর্কে। নতুন প্রজন্মকে দেশের ইতিহাস জানার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় ইতিহাস না জানলে তারা দেশের মূলধারাকে বুঝতে পারবে না এবং তাদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে শেকড়হীন হয়ে যাবে।

মূল পাঠ্যসূচির প্রয়োজনীয়তা

আমাদের ইতিহাসের মূল ধারা বুঝতে হলে শিক্ষার্থীদের এই বিষয় অবশ্যই জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর নেতৃত্বে হওয়া মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানার জন্য এই বিষয়ের গুরুত্ব অপরিসীম।

১৯৭৫ সাল পর্যন্ত অধ্যায়গুলো পড়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারবে কীভাবে দেশ স্বাধীন হয়েছে এবং কেন ১৯৭৫ সালকে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস অবশ্য পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। শিক্ষার্থীরা দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানবে এবং তারা দেশের প্রকৃত আদর্শ এবং মূল্যবোধের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। ইতিহাসের ভুল ব্যাখ্যা এবং বিকৃতি রোধে এই পাঠ্যক্রম একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, এবং এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে। বন্ধুরা আপনি যদি অন্যান্য বই সম্মন্ধে জানতে চান তবে আমাদের শিক্ষা বই ক্যাটাগরি ভিজিট করুন।

Anirban Roy (EDU)
Anirban Roy (EDU)https://www.whatsupbd.com/
হাই, আমি অনির্বান। আমি একজন প্রফেশনাল ব্লগ রাইটার। শিক্ষা সম্পর্কিত আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
RELATED ARTICLES

জনপ্রিয় পোষ্ট

Recent Comments