Sunday, December 22, 2024
বাড়িলেখাপড়াবাংলা রচনাবড়দিন রচনা Class 7 - সহায়ক।

বড়দিন রচনা Class 7 – সহায়ক।

বড়দিন, যাকে আমরা বড় দিনও বলি, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর এই দিনটি উদযাপিত হয়। খ্রিস্টানদের জন্য বড়দিনের গুরুত্ব ঠিক যেমন হিন্দুদের জন্য দীপাবলি বা মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন। এই দিনটি শৈশব থেকে বড়দের সবাই অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে অপেক্ষা করে। বড়দিনের দিনটি সাধারণত অনেক রঙিন এবং আনন্দমুখর হয়। স্কুল, কলেজ এবং অফিসগুলোতে এই দিনটি বিশেষভাবে উদযাপন করা হয়। মানুষের মধ্যে আনন্দ এবং উৎসবের মেজাজ দেখা যায়। বড়দিন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, গান এবং পার্টি অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি, সবাই একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বড়দিনের বার্তা, কবিতা, শুভেচ্ছা বার্তা ইত্যাদি পাঠায়।

বড়দিন রচনা Class 7

শিশুরা বিশেষভাবে অপেক্ষা করে বড়দিনের জন্য, কারণ এই দিনটিতে তারা অনেক উপহার পায় এবং পরিবারে আনন্দের পরিবেশ থাকে। বড়রা ও একে অপরকে ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা জানাতে ভুলে না। তাদের মধ্যে মিষ্টি কথোপকথন এবং একে অপরের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেওয়া হয়।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

এই দিনটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি সবার মধ্যে ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং সুখের অনুভূতি ছড়ানোর একটি সুযোগ। বড়দিনের আনন্দে সবাই মিলেমিশে সময় কাটায়, এবং এই দিনটি মানবতার প্রকৃত মূল্য বুঝতে সাহায্য করে।

সূচনা

বিশ্বের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব হলো বড়দিন, যা খ্রিস্টমাস নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক খ্রিস্টান রয়েছেন, যারা অন্যান্য দেশের খ্রিস্টানদের মতো আমাদের দেশে নানা আনন্দে ভরা পরিবেশে এই দিনটি উদযাপন করেন। এই দিনটি আমাদের দেশে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয় এবং অনেকেই এই দিনটি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে ভালোবাসেন।

আরও জানুন:  অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট - সহায়ক।
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ইতিহাস

বড়দিন হলো মহামানব যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন। খ্রিস্টীয় ২০০ সাল থেকে এ উৎসব শুরু হয়েছে এবং প্রতি বছর এই দিনটি পালন করা হয়। যীশু খ্রিস্ট বেথলেহেমে, যা বর্তমানে ইসরায়েলের অংশ, সেখানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মানবজাতিকে পাপ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং মানুষের জীবনকে আলোকিত করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর বাণী ছিল—অহিংসা, শান্তি ও ভালোবাসা। তিনি বিশ্বাস করতেন, পাপকে ঘৃণা করতে হবে, কিন্তু পাপীকে ঘৃণা করা উচিত নয়।যীশু খ্রিস্ট মানবতাকে শিখিয়েছিলেন সত্য ও ন্যায় পথে চলার গুরুত্ব, এবং সেই সঙ্গে তিনি সকলের জন্য ভালোবাসা, সহানুভূতি ও শান্তির বার্তা দিয়েছেন। তবে তাঁর শাসকদের মাঝে বিরোধ ছিল, কারণ তারা যীশুকে নিজেদের শাসন ক্ষমতায় হুমকি হিসেবে দেখত। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ক্রুশে ঝুলিয়ে মারা হয়, তবে তিনি তাঁর শত্রুদের অভিশাপ দেননি, বরং তাদের মঙ্গল কামনা করেছিলেন। বড়দিনে আমরা সেই মহান মানুষটির জন্মদিন উদযাপন করি, যিনি মানবতার জন্য জীবন দিয়েছিলেন।

উৎসবের বৈচিত্র্য

একসময় বড়দিন ছিল শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এটি মূলত গির্জায় অনুষ্ঠিত হতো, যেখানে সবাই গুরুগম্ভীর প্রার্থনায় অংশ নিত। তবে সময়ের সাথে সাথে এই উৎসবে যোগ হয়েছে নানা ধরনের আনন্দ। প্রার্থনা অবশ্যই বাদ যায়নি, তবে এখন এই উৎসব অনেক বেশি আনন্দমুখর হয়ে উঠেছে। বড়দিনের প্রার্থনা শুরু হয় ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়, যা খ্রিস্টমাস ঈভ হিসেবে পরিচিত। ২৫ ডিসেম্বর সকালে গির্জায় ঘণ্টাধ্বনি বাজিয়ে এবং বিশেষ প্রার্থনার মাধ্যমে খ্রিস্টানরা একত্রিত হয়ে পাপ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেন। এরপর শুরু হয় পুরো দিনের উৎসব। এই উপলক্ষে গির্জাগুলো বিভিন্ন ধরনের সাজসজ্জায় সজ্জিত করা হয়, যেমন ফুল, লতাপাতা, রঙিন কাগজ এবং আলোর মালায়।বড়দিনের উৎসবের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো শীতপ্রধান দেশের ঋতু-উৎসব। এই সময় ‘সান্তা ক্লজ’ বা শীতবুড়োকে কল্পনা করা হয়, এবং অনেকেই সান্তা ক্লজ সেজে উপহার নিয়ে আসেন। এছাড়া ক্রিসমাস বৃক্ষও সাজানো হয় পাইন বা ফার গাছ দিয়ে, যাতে ছোট ছোট বৈদ্যুতিক বাল্ব এবং নানা ধরনের উপহার দিয়ে সাজানো হয়। গাছের শীর্ষে থাকে দেবদূত বা তারার প্রতিকৃতি। বড়দিনের উৎসব শুধু খ্রিস্টানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষও এতে অংশগ্রহণ করেন। শহর, গ্রাম এবং বাড়ি বাড়ি জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে উৎসব পালিত হয়। কেউ কেউ রাতে আলোকসজ্জা করেন, এবং সবাই নতুন পোশাক পরেন। বিশেষভাবে বড়দিনের খাবারের মধ্যে থাকে মাংস, পুডিং, কেক, পিঠা, পোলাও, বিরিয়ানি, পায়েশ ইত্যাদি।

আরও জানুন:  স্বদেশ প্রেম রচনা ২০ পয়েন্ট - সহায়ক।
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

উপসংহার

বড়দিনের উৎসব এখন আমাদের দেশের একটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এটি শুধুমাত্র সচ্ছল মানুষদের আনন্দের দিন হয়ে থাকে না, বরং এতে অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষও অংশ নেয়। উৎসবের পাশাপাশি, সেবার কাজও পালন করা হয়। অসহায়দের মধ্যে খাবার, পোশাক এবং চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এতে একটি উৎসবের সঙ্গে সঙ্গে মানবিকতা ও মমতারও পরিচয় পাওয়া যায়। তাই বড়দিনের উৎসব সত্যিই একটি মহিমান্বিত দিন হয়ে ওঠে, যেখানে সবার আনন্দের মধ্যে সেবা ও প্রীতি জড়িয়ে থাকে।

Anirban Roy (EDU)
Anirban Roy (EDU)https://www.whatsupbd.com/
হাই, আমি অনির্বান। আমি একজন প্রফেশনাল ব্লগ রাইটার। শিক্ষা সম্পর্কিত আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
RELATED ARTICLES

জনপ্রিয় পোষ্ট

Recent Comments