Monday, December 23, 2024
বাড়িভর্তি বিজ্ঞপ্তিসরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভর্তির লটারি ২০২৪: আগামী ১৭ ডিসেম্বর

সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভর্তির লটারি ২০২৪: আগামী ১৭ ডিসেম্বর

বর্তমানে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নানা কারণে আলোচনার মধ্যে রয়েছে। এরই মধ্যে একটি বড় খবর সামনে এসেছে, যা দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রমের সাথে সম্পর্কিত। সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির লটারি আগামী ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এটি অনেকের কাছে উত্তেজনাপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এবারের লটারি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটালভাবে অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হবে, যা প্রযুক্তির সুবিধা ব্যবহার করে সঠিকভাবে এবং স্বচ্ছভাবে ভর্তি প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবে। সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রমে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করছে এই লটারির তারিখ এবং প্রক্রিয়া।

সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভর্তির লটারি ২০২৪

এ বছর ভর্তি আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়েছিল গত ১২ নভেম্বর। তবে, ভর্তি আবেদন শেষ হয়েছে ৩০ নভেম্বর। এ সময়ের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন। বিদ্যালয়ে ভর্তির আগ্রহ বিশেষ করে সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে ছিল অত্যন্ত বেশি। আলাদা কথা হলো, বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির আগ্রহ বেশ কম ছিল। সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা অতিরিক্ত আগ্রহ দেখিয়েছে, ফলে সেখানে আবেদন সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। বিপরীতে, বেসরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির হার ছিল তুলনামূলকভাবে কম।

লটারির তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

আসল খবর হলো, লটারি অনুষ্ঠানের তারিখ কয়েক দিন পিছিয়ে গেছে। প্রথমে ১২ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিলো, কিন্তু পরবর্তীতে টেলিটকের অনুরোধে এবং কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে তারিখে পরিবর্তন আনা হয়। ফলে, নতুন তারিখ হলো ১৭ ডিসেম্বর। এই সিদ্ধান্তটি দৈনিক আমাদের বার্তাকে নিশ্চিত করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক প্রফেসর ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল। তিনি জানান, প্রযুক্তিগত কারণে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং নতুন তারিখে লটারি অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

Telegram Group Join Now

সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আগ্রহ বাড়ানোর একটি বড় কারণ ছিল অর্থনৈতিক সুবিধা। অনেক অভিভাবক সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির মাধ্যমে শিক্ষার মান বজায় রাখার পাশাপাশি খরচের দিক থেকে সুবিধা পেতে চান। অধিকাংশ সরকারি স্কুলে শিক্ষার মান উন্নত, এবং সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারী অনুদান বা ভর্তির বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়।

বিপরীতে, বেসরকারি স্কুলগুলোর প্রতি আগ্রহ তুলনামূলকভাবে কম। এর কারণ হিসেবে বলা যায় যে, বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। এ ছাড়া, বেসরকারি বিদ্যালয়ে অনেক সময় শিক্ষার মান সরকারি বিদ্যালয়ের সমান নাও হতে পারে। এছাড়া, বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে অভিভাবকদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা অনেক বেশি প্রয়োজন।

লটারি প্রক্রিয়া কীভাবে চলবে

লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন একটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়া হতে যাচ্ছে। ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে যেসব শিক্ষার্থী নির্বাচিত হবে, তাদের জন্য শীঘ্রই ভর্তির তথ্য জানানো হবে। এতে কোনো ধরনের ভুয়া তথ্য বা স্বার্থের সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না, যা একটি উন্নত ও আধুনিক ব্যবস্থার প্রতীক। লটারির মাধ্যমে সঠিকভাবে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের স্কুলে ভর্তি হতে পারবে, এবং এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সঠিকভাবে গড়ে উঠতে পারে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

আগামী বছরেও এমন একই ধরনের ভর্তি প্রক্রিয়া হতে পারে। এর মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুযোগের সমতা নিশ্চিত হবে, এবং অভিভাবকদের জন্য সুবিধা বাড়বে। তবে, এটি আরও উন্নত ও সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার দিকে ধাবিত হতে পারে যদি সঠিক প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং প্রশাসনিক উদ্যোগ থাকে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এবারের ভর্তি আবেদন সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। শিক্ষার্থীরা এবার সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য ব্যাপকভাবে আবেদন করেছেন। এই সংখ্যাটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি সিস্টেমের উপর নানা প্রভাব ফেলতে পারে।

ভর্তি আবেদনের পরিসংখ্যান

এবার ১৮ দিনে, সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৯ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করেছেন। এই সংখ্যা অনেকটাই বড়, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। শিক্ষার্থীরা সরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৭২টি আবেদন করেছেন, এবং বেসরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬৭টি। এবার সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৫ হাজার ৬২৫টি বিদ্যালয়ে মোট ১১ লাখ ১৬ হাজার ৬৩৩টি আসন রয়েছে। এসব আসনের বিপরীতে আবেদনকারীর সংখ্যা অনেক বেশি, যা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চিন্তিত।

আরও জানুন:  শাবিপ্রবি ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৫ সালের প্রকাশিত হয়েছে।

সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন

সরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন নিয়ে পরিসংখ্যান বেশ উদ্বেগজনক। ৬৮০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৮ হাজার ৭১৬টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৭২ জন। সরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এতে করে সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির সুযোগ কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, সরকারি স্কুলের প্রতি আগ্রহের পরিমাণ বেড়েছে। এবারের ভর্তি প্রক্রিয়ায় ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫০টি সরকারি স্কুল পছন্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ থেকে বোঝা যায়, সরকারি স্কুলে পড়াশোনার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহের পরিমাণ বেড়েছে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন

বেসরকারি বিদ্যালয়ে আবেদনকারীর সংখ্যাও কম নয়। এবার ৪ হাজার ৯৪৫টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে মোট ১০ লাখ ৭ হাজার ৬৭৩টি আসন রয়েছে। এর বিপরীতে আবেদন করেছেন ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬৭ জন শিক্ষার্থী। বেসরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা অনেকটাই কম হলেও, ৬ লাখ ২৮ হাজার ৪টি বেসরকারি স্কুল পছন্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এটি দেখিয়ে দেয় যে, বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আগ্রহী হলেও তাদের সংখ্যা সরকারি বিদ্যালয়ের তুলনায় কম।

ভর্তির প্রক্রিয়া ও ডিজিটাল লটারি

এবারের ভর্তি প্রক্রিয়া হবে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে। লটারির মাধ্যমে ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থীদের বাছাই করা হবে এবং তারপর ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। এটি একটি নতুন পদক্ষেপ, যা শিক্ষার্থীদের জন্য আরও নিরপেক্ষ ও আধুনিক ভর্তি পদ্ধতি সরবরাহ করবে। ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনা করলে, যেকোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব বা অসুবিধার সম্ভাবনা কমে যাবে। এখনো পর্যন্ত, বাংলাদেশের সরকারি স্কুলগুলোর অনেক আসন শূন্য থাকে। তবে এই ধরনের লটারির মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভর্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সরকারের এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করবে। বিশেষত, এমন অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা আগ্রহী হয়ে আবেদন করেও কোনো কারণে ভর্তি হতে পারছিলেন না।

আরও জানুন:  উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি ভর্তি তথ্য ২০২৪-২৫ | প্রকাশিত হয়েছে - জানতে পড়ুন।

এবারের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

যেহেতু আবেদনকারীর সংখ্যা অনেক বেশি, তাই ভর্তি প্রক্রিয়া যথাযথভাবে পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লটারির মাধ্যমে ভর্তি নিশ্চিত হলে, শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যুক্ত হবে, যেখানে যথাযথ পরিকল্পনা এবং পরিকল্পিতভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এছাড়া, বেসরকারি স্কুলের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কিছুটা কম হলেও, তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আবেদন করেছেন। যা থেকে বোঝা যায়, শিক্ষার্থীরা শুধু সরকারি বিদ্যালয়েই নয়, বরং বেসরকারি বিদ্যালয়ে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী।

এবারের ভর্তি আবেদন ও আসনের সংখ্যা নিয়ে একটি বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরা হলো:

শ্রেণীবিদ্যালয় সংখ্যাআসন সংখ্যাআবেদনকারী সংখ্যাপছন্দ সংখ্যা
সরকারি6801,08,7166,35,0729,64,850
বেসরকারি4,94510,07,6733,48,4676,28,004

এই টেবিল থেকে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে যে সরকারি বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ অনেক বেশি, তবে আসনসংখ্যা সাপেক্ষে বেসরকারি বিদ্যালয়ের আগ্রহও একেবারে কম নয়।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এই নতুন ব্যবস্থার ফলে কী ধরনের পরিবর্তন আসবে তা আগামীতে সময়ই বলে দেবে। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিশ্বাসযোগ্যতা ও সুষ্ঠুতা নিশ্চিত করা। ডিজিটাল লটারি পদ্ধতি যদি সফলভাবে কার্যকর হয়, তবে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের জন্য আরও উন্নত ও সুষ্ঠু ভর্তি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। শেষে, শিক্ষা বিভাগের এই উদ্যোগ দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধিঅপর্যাপ্ততা দূরীকরণ দেশের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্যে পড়েছে। ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ভর্তি নিশ্চিতকরণ একটি আধুনিক প্রক্রিয়া, যা সকল শিক্ষার্থীকে একক সুযোগ প্রদান করবে। তবে, সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি থাকলেও, বেসরকারি বিদ্যালয়ে আগ্রহ তুলনামূলকভাবে কম। এবারকার লটারি ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এবং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের জন্য সেরা স্কুলে ভর্তি হতে পারবে।

সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর

সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে?

সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া ডিজিটাল লটারি মাধ্যমে পরিচালিত হবে। ১৭ ডিসেম্বর এটি অনুষ্ঠিত হবে, এবং প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হবে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির আগ্রহ কম কেন?

বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার খরচ বেশি এবং অনেক সময় মান সরকারি বিদ্যালয়ের সমান না হওয়ায়, অভিভাবকরা সেখানে কম আগ্রহ দেখান।

লটারির তারিখে কেন পরিবর্তন হলো?

প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এবং টেলিটকের অনুরোধে লটারির তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।

Anirban Roy (EDU)
Anirban Roy (EDU)https://www.whatsupbd.com/
হাই, আমি অনির্বান। আমি একজন প্রফেশনাল ব্লগ রাইটার। শিক্ষা সম্পর্কিত আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
RELATED ARTICLES

জনপ্রিয় পোষ্ট

Recent Comments